পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি-৩ ব্লকের দূরমুঠ গ্রাম পঞ্চায়েত বিজেপি পরিচালিত। অথচ সেই পঞ্চায়েতেই নিজেদের দলের পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধেই তীব্র বিক্ষোভে ফেটে পড়লেন বিজেপিরই নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা। পরিস্থিতি গড়ায় হাতাহাতি ও ধস্তাধস্ত…
পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি-৩ ব্লকের দূরমুঠ গ্রাম পঞ্চায়েত বিজেপি পরিচালিত। অথচ সেই পঞ্চায়েতেই নিজেদের দলের পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধেই তীব্র বিক্ষোভে ফেটে পড়লেন বিজেপিরই নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা। পরিস্থিতি গড়ায় হাতাহাতি ও ধস্তাধস্তিতে। উত্তেজনা সামাল দিতে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় মারিশদা থানার পুলিশ।পঞ্চায়েত প্রধান কাঞ্চন মন্ডলের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ অভিযোগ তোলেন বিজেপি সদস্যরা। তাঁদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে বেহাল অবস্থায় রয়েছে দূরমুঠ পঞ্চায়েত অফিস থেকে দইসাই ভাগাড় পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তা। বর্ষায় এই কাঁচা রাস্তা বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। মহরমের আগে রাস্তা সংস্কারের আশ্বাস দিলেও, পরে ইটভাটার ছাই ফেলে ‘সাময়িক’ সমাধানের চেষ্টা করেন প্রধান। পাশাপাশি পঞ্চায়েত অফিসে আগত সাধারণ মানুষদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা বাইরে বসিয়ে রাখার অভিযোগও উঠে আসে তাঁর বিরুদ্ধে।এছাড়াও, পঞ্চায়েতের গুরুত্বপূর্ণ কাজকর্ম বিজেপির নির্বাচিত সদস্যদের না জানিয়ে করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ ওঠে। সেইসব অভিযোগ নিয়ে প্রধান কাঞ্চন মন্ডলের কাছে বিক্ষোভ দেখাতে গেলে, তাঁর অনুগামীরা বিক্ষোভকারীদের মারধর করে বলে অভিযোগ। পঞ্চায়েত অফিসের মধ্যেই চলে ধস্তাধস্তি, উত্তেজনা চরমে ওঠে।
এই ঘটনায় রিনা বারুই ও ভগবান চন্দ্র মন্ডল সহ একাধিক বিজেপি জনপ্রতিনিধি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাঁদের বক্তব্য, এলাকায় স্বজনপোষণ ও দুর্নীতির মাধ্যমে কাজ চালাচ্ছেন পঞ্চায়েত প্রধান। তবে সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন কাঞ্চন মন্ডল। তাঁর দাবি, “পঞ্চায়েতে কাজ চলছে স্বচ্ছ ভাবেই।”ঘটনাটি নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস ও সিপিএম।
তৃণমূল নেতা দিলীপ ভূঁইয়ার কটাক্ষ, “নিজেদের পঞ্চায়েতেই নিজেদের দলের লোকজনের এমন মারামারি নজিরবিহীন।” সিপিএম নেতা ঝাড়েশ্বর বেরা বলেন, “এটাই বিজেপির আসল চেহারা। গোষ্ঠীদ্বন্দেই তাঁরা নিজেদের দল ভাঙছেন।”তবে শেষপর্যন্ত, পরিস্থিতি সামাল দিতে পঞ্চায়েত প্রধান ১৫ দিনের মধ্যে রাস্তার কাজ শুরু করার আশ্বাস দিলে উত্তেজনা কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে। এখন দেখার, এই আশ্বাস কতটা বাস্তবায়িত হয়, আর সেই বেহাল রাস্তা কবে পায় স্থায়ী রূপ।

No comments